দেশের বাজারে হঠাৎ করেই বেড়েছে ডিমের দাম। ভোক্তাদের দাবি, বাজারে সংকট সৃষ্টি করতে হিমাগারে মজুদ করা হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্য। এক সপ্তাহে তিন দফা অভিযানে বগুড়ায় আট লাখ পিস ডিম উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনটি হিমাগারকে জরিমানাও করেছে স্থানীয় প্রশাসন। সর্বশেষ গতকাল সদর উপজেলার এরুলিয়ার কাফেলা কোল্ড স্টোরেজে অভিযান চালানো হয়। এ সময় উদ্ধার করা হয়েছে দুই লাখ পিস ডিম। জরিমানা করা হয়েছে ৩০ হাজার টাকা।
সদর উপজেলার রাজা বাজারে ডিম কিনতে আসা আল-মামুন জানান, বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী ডিমের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। এ চক্রের বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। হিমাগারে কী মজুদ করা হচ্ছে, সে বিষয়ে নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি।
বগুড়া সদর উপজেলার সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কাফেলা কোল্ড স্টোরেজে আলুর পাশাপাশি ফল ও ডিম সংরক্ষণের অনুমোদন রয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষ আলু ও কিছু ফল মজুদ রেখেছে। পাশাপাশি বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির জন্য এক মাস ধরে ডিম মজুদের সংবাদ পাওয়া গেছে। গতকাল দুপুরে সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। মজুদ রাখা ২ লাখ ১৮ হাজার ১৭৯ পিস আজ বাজারে বিক্রির নির্দেশ দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও বগুড়া সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাকিব হাসান জানান, হিমাগারে ডিম মজুদ করে রাখার সংবাদে অভিযান পরিচালনা করা হয়। বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরির জন্যই ডিমগুলো মজুদ করা হয়েছিল। হিমাগার মালিককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা ও মজুদ করা ডিম বিক্রির নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তবে কাফেলা কোল্ড স্টোরেজের ব্যবস্থাপক আব্দুল হান্নান জানান, সবজি ও ফলের সঙ্গে ডিম সংরক্ষণের অনুমোদন রয়েছে। তারপরও তাকে জরিমানা করা হয়েছে।
ডিমগুলো কীভাবে মজুদ করা হলো, কারা মজুদ করেছে সে বিষয়ে তিনি কিছু বলতে চাননি। তিনি শুধু বলেন, ‘ডিমগুলো স্থানীয় খামারিরা রেখেছেন।’
এর আগে ১৫ মে কাহালু উপজেলার আফরিন কোল্ড স্টোরেজ থেকে প্রায় পাঁচ লাখ পিস ডিম উদ্ধার করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। কাহালু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোছা. মেরিনা আফরোজের নেতৃত্বে এ অভিযান চালানো হয়। অবৈধভাবে ডিম মজুদ রাখার অপরাধে হিমাগারের মালিককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে ডিমগুলো সাতদিনের মধ্যে বাজারজাত করার নির্দেশ দিয়ে সতর্ক করা হয়।
এছাড়া ১৮ মে সদর উপজেলার নুনগোলা ইউনিয়নের ঘোড়াধাপহাটে সাথী কোল্ড স্টোরেজ-২-এ অভিযান চালিয়ে এক লাখ পিস ডিম উদ্ধার করা হয়। অভিযান পরিচালনা করেন সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাকিব হাসান চৌধুরী।
তিনি জানান, হিমাগারের ম্যানেজার আব্দুল করিমকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া তাৎক্ষণিক প্রায় ৪০ হাজার ডিম ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে বাজারজাত করা হয়। অবশিষ্ট ৬০ হাজার ডিম দ্রুত বিক্রি করার জন্য বলা হয়েছে। যারা অবৈধভাবে মজুদ করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ানোর চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।