ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

আমরা কী মগের দেশে বাস করছি !!!

শাক সবজি এখন যেন বিলাসী !!!


নিজস্ব প্রতিবেদক photo নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৫-১০-২০২৪ দুপুর ১:৩২

* বাজারেই চলে যাচ্ছে সব টাকা!

শাক সবজি এখন বিলাসী পণ্যে পরিণত হয়েছে। পেঁপে ও কচুরমুখী ছাড়া ৯০ টাকার নিচে মিলছে কোনো সবজি। বিশেষ করে কাঁচা মরিচের দামতু আকাশ চুম্বি ৪৫০ টাকা কেজি। 

মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) সকালে কেরানীগঞ্জ উপজেলার কলাতিয়া, আটিবাজার, জিনজিরা, রুহিতপুর সহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে, পটল ১২০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ১০০-১২০ টাকা, করলা ১০০ টাকা কেজি, কাঁকরোল ৯০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া কেজিপ্রতি ৬০ টাকা, ধুন্দল ৯০টাকা, ঝিঙ্গা ১০০ টাকা,  টমেটো ৩০০ টাকা, গাজর ১৫০ টাকা ও বরবটি ৯৫ টাকা, পুঁইশাক ৪০টাকা, পেঁপে ৬৫ টাকা,বেগুন ১২০ কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।আর পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ১৩০ টাকা, রসুন ২৫০ টাকা, আদা বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকায়। এছাড়া, ডিমের দাম কমার কোনো লক্ষণ নেই। দাম বেড়ে ডজন প্রতি ডিম বিক্রি হচ্ছে ২১০ টাকায়।

বাজারে ইলিশ মাছের দাম কমেছে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০০-২২০০ টাকায়। রুই মাছ ৪০০-৪৭০ টাকা। পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০-২৬০, কাচকি ৫০০, কৈ ৪০০-৪৪০, চিংড়ি ৯০০-১১০০ টাকা, দেশি টেংরা ১০০০ ও পাবদা মাছ ৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া গরুর মাংসের কেজি ৮০০ টাকা, খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজার করতে আসা ক্রেতা একরামুল বলেন, ‘বাজারের সব কিছুর দাম বেড়ে আমাদের ক্রয় ক্ষমতার  বাইরে চলে যাচ্ছে । কি কিনবো বুজে উঠতে পারছি না। বাজারে এসেই মাথা গরম হয়ে যায়। এমন দাম বাড়লে আমরা কি করে চলবো। সবজি সহ সকল পণ্যেই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। আমরা গরিব মানুষ এভাবে দাম বাড়লে  কি করে বাজার করবো। এখনতু বাজারে যার যা মন চাচ্ছে সে ভাবে দাম হ্যাকাচ্ছে কেননা বাজার মনিটরিং করার মতো কাউকেতু দেখছি না। এ সুযোগ টাকে কাজে লাগাচ্ছে ব্যবসায়ীরা।’

রিকশা চালক এমদাদুল বলেন, ‘আমি দিনে ৫০০-৭০০ টাকা ইনকাম করি। যখন বাজারে আসি তখন কি কিনবো ভেবে পাইনা। যে দাম সব জিনিসের কাঁচা বাজার থেকে মাছ সহ চাল ডাল তেল সব পণ্যের দাম চড়া । এখন আমাদের গরীদের হইছে মরণ কেননা আমরা যে ডাল ভাত খাবো সেই উপায় ও নেই।’

সবজি বিক্রেতা আশরাফ বলেন, ‘বৃষ্টির পানিতে সবজি খেত ডুবে যাওয়ায় সবজির দাম একটু বেড়েছে।  কেরানীগঞ্জের বেশির ভাগ ফসলি জমিতে বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। তাই বাজারে সবজি অনেক কম, সবজির দাম একটু  বেশি। ১ মাস পর সবজির দাম  কমে যাবে।’
 
আরেক সবজি বিক্রেতা সাদ্দাম বলেন, ‘আমি ৫ পাখি জায়গায় সবজি চাষ করছিলাম। অতি বৃষ্টিতে আমার সবজি খেত ডুবে গেছে। এখন পানি থেকে যতটুকু সম্ভব সবজি অনে বাজারে বিক্রি করছি দাম ভালোই পাচ্ছি। কিন্তু পানিতে গাছ ও সবজি খেত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তারপর ও এখন যে দাম পাচ্ছি আর ৫ দিন বিক্রি করতে পারলেই আমার পুষিয়ে যাবে।

মুদী দোকানি রমেশ মন্ডল বলেন, ‘এখন বাজারে তেল,আটা, ময়দা, চাল সহ সকল পণ্যের দাম কিছু টা বেড়েছে। গত কয়েক দিনের তুলনায় এখন দাম বাড়তি। আটা, ময়দা, তেলের দাম আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। আর অনেক পণ্যের দাম কিছুটা কমেছে।’

চাল ব্যাবসিয়ে সুব্রত বলেন, ‘চালের দাম আগের থেকে কিছুটা বেড়েছে। নাজিরসাইল আর মিনিকেট  চালের দাম বস্তায় ১০০ টাকা  বেড়েছে। বর্ষায় চালের দাম এমনি বাড়ে। কিন্তু এবার তেমন বাড়েনি । এখন চালের দাম ক্রেতার হাতের নাগালেই আছে।’ 

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. রইস আল রেদওয়ান আহমেদ বলেন, ‘টানা বৃষ্টিতে সবজির ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সবজির দাম কিছুটা বেড়েছে। সবজি ছাড়া অন্য কোন পণ্যের দাম বেশি রাখার কোন সুযোগ নেই। প্রতিটি দোকানে সরকারি মূল্য তালিকার দাম অনুযায়ী পণ্য বিক্রি করতে হবে। যে ব্যবসায়িরা ক্রেতার কাছ থেকে পণ্য বেশিতে বিক্রি করছে। অতি দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

younus / younus