বাজারে মাছ-মাংস বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই
এদিকে, বাজারে সবকিছুর বাড়তি দামের বিষয়ে বরাবরের মতোই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। অপরদিকে পুরোনো অজুহাত হিসেবে সরবরাহ কম থাকার বিষয়টিকে দাম বাড়ার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন বিক্রেতারা।
আজ শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২১০ টাকায়। লেয়ার মুরগি প্রতি কেজি ৩৭০ টাকা। আর সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ৩৬০ টাকা ও দেশি মুরগি ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা। গরুর মাংস আগের দামেই প্রতি কেজি ৭৮০ টাকায় রয়েছে। আর প্রতি কেজি খাসি বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকায়।
মালিবাগের একটি বাজারে এদিন বাজার করতে আসা এক চাকরিজীবী বলেন, ‘আজ বেশ কিছুদিন যাবৎ ব্রয়লার থেকে শুরু করে সব ধরনের মুরগির দাম অতিরিক্ত বেশি। কিন্তু বাজার মনিটরিংয়ের কোনও কার্যক্রম দেখছি না। আমাদের মতো সাধারণ ক্রেতাদের বাড়তি দামেই কিনতে হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া গরু-খাসির মাংস তো স্পর্শ করতে পারি না। মাংসের চাহিদা সাধারণ মানুষ মেটায় ব্রয়লার মুরগি দিয়ে। কিন্তু সেই ব্রয়লার মুরগিও ২১০ থেকে ২২০ টাকায় প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে। সোনালি ও লেয়ার মুরগির দাম আরও দেড়শ টাকা বেশি। তাহলে আমরা সাধারণ মানুষ এত দাম দিয়ে কিনব কীভাবে? এসব মুরগির দাম যে বেড়েছে, আর কমার কোনো নামই নেই।’
বাড়তি দামের বিষয়ে একই বাজারের এক মুরগি বিক্রেতা বলেন, কিছুদিন আগে তীব্র গরমের কারণে মুরগির উৎপাদন কমে গিয়েছিল। খামারির অনেক মুরগি মারা গেছে গরমে। মূলত সেই সময় ব্রয়লার থেকে শুরু করে সব ধরনের মুরগির দাম বেড়েছে। এখনও গরম চলমান আছে। সেই কারণে মূলত সব ধরনের মুরগির দাম বাড়তি। পাইকারি বাজার থেকে আমাদের বাড়তি দামে মুরগি কিনতে হচ্ছে। তাই মূলত খুচরা বাজারে মুরগির দাম বাড়তি যাচ্ছে।
এদিকে, বাজারে সব ধরনের মাছের দামই বাড়তি যাচ্ছে। এর মধ্যে রুই মাছ প্রতি কেজি ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকায়, বড় রুই ৪০০ টাকায়, পাঙাশ ২৩০ টাকা, চিংড়ি আকার ভেদে ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকায়, পাবদা ৪০০ টাকায়, তেলাপিয়া ২২০ টাকায়, চাষের কই ২৮০ টাকায়, কাতল ৩৫০ টাকায়, গলসা প্রতি কেজি ৫৫০ টাকায়, টেংরা ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকায়, বড় শিং ৫৫০ টাকায়, ছোট শিং ৪০০ টাকায়, বড় বোয়াল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় ও বড় আইড় মাছ ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাছের অতিরিক্ত দামের বিষয় অভিযোগ জানিয়ে গুলশান সংলগ্ন লেকপার বাজারে এক ক্রেতা বলেন, মাছের দাম এত বাড়তি যে, চাষের মাছও কেনা যায় না। আমাদের মতো সাধারণ মানুষ পাঙাশ, তেলাপিয়া, চাষের কই ও রুই কোনোভাবে কিনছিলাম। কিন্তু এখন এসব মাছের দামও অতিরিক্ত বেশি। পাঙাস মাছ তো ২৩০ টাকা কেজি, চাষের কই ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি। ভালো মানের মাছ তো কিনতেই পারি না, সেগুলোর দাম আকাশ ছোঁয়া। দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে এখন কাটা পাঙাশ মাছ কিনলাম।
অন্যদিকে, মহাখালীর একটি বাজারে এক মাছ বিক্রেতা বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই মাছের দাম বাড়তি যাচ্ছে। প্রথমত ফিডের দাম বেড়ে যাওয়ার পরে সব ধরনের মাছের দাম বেড়েছিল। সেভাবেই বাজার চলছিল। কিন্তু গত কিছুদিনের তীব্র গরমে মাছের সরবরাহ কমে গিয়েছিল। সেই সময় মাছের দাম আরেক দফা বেড়েছে। মাছের বাড়তি দামের বিষয়ে বিক্রেতাদের কোনও হাত নেই। আমরা পাইকারি বাজার থেকে যেমন দামে মাছ কিনে আনি, তেমন দামে খুচরা বাজারে বিক্রি করি। যখন আমাদের কেনা দাম কম পড়বে, তখন আমরাও ক্রেতা পর্যায়ে কম দামে মাছ।
younus / younus